বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ হওয়ায় এর চলমান উন্নয়নের অগ্রগতি ধাবিত করতে এবং জনগণের বিদ্যুতের চাহিদা ঠিকমত পূরণ করতে দরকার প্রচুর পরিমাণে বিদ্যুৎ। জলবিদ্যুৎ, সৌরশক্তি ইত্যাদি নবায়নযোগ্য উৎসের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সাফল্য অর্জনের পর সরকার অন্য একটি নবায়নযোগ্য উৎস বায়ু হতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের দিকে বিশেষ নজর দিয়েছে। তারই অংশ হচ্ছে উইন্ডমিল বা বায়ুকল। বাংলাদেশ সরকার তথা বিদ্যুৎ বিভাগের নির্দেশনায় টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (স্রেডা) বায়ুবিদ্যুৎ প্রসারের জন্য নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।
একটি বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের প্রধান ও পূর্বশর্ত হচ্ছে বায়ুবিদ্যুতের সম্ভাব্যতা যাচাই বা উইন্ড রিসোর্স এ্যাসেসমেন্ট। কোন স্থানে বিগত ১০ বছর ধরে বায়ুর গতিপ্রকৃতি কেমন বা পরবর্তী ১০ বছরের আবহাওয়ার সম্ভাব্য পরিবর্তন বিবেচনা করত সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়। এই উইন্ড রিসোর্স এ্যসেসমেন্ট এর কাজে বাংলাদেশ বরাবরই বিদেশী দাতাসংস্থাদের আর্থিক ও কারিগরী সহায়তার উপর নির্ভরশীল ছিল। বর্তমানে স্রেডা নিজ দক্ষতায় উইন্ড রিসোর্স এ্যসেসমেন্ট বিষয়ে কাজ শুরু করেছে। তাই এবিষয়ে শুরুতেই জানতে হবে উইন্ড রিসোর্স এ্যাসেসমেন্ট কার্যক্রমে কি কি ধাপ অতিক্রম করতে হয়।
ধাপ: ১
বায়ুবিদ্যুতের জন্য সম্ভাব্য স্থান নির্ধারণে প্রথমেই দেখতে হবে একটি দেশের গত ২০-৫০ বছরের বায়ুর তথ্য যা বিভিন্ন ওপেন সোর্স প্ল্যাটফর্ম যেমনঃ মেটাডাটা, গ্লোবাল উইন্ড এটলাস, এনআরইএল ম্যাপ ইত্যাদি ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া যায়। এসকল প্ল্যাটফর্ম থেকে প্রাপ্য তথ্য পর্যালোচনা করে বাংলাদেশের বায়ুবিদ্যুৎ এর জন্য সম্ভাব্য এলাকাগুলো চিহ্নিত করা সম্ভব।
ধাপ: ২
প্রাথমিকভাবে সম্ভাব্য এলাকাগুলো চিহ্নিত করার পর পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হয় সাইট স্পেসিফিক তথ্য আহরণের জন্য। যেমন: মেটাডাটা হতে দেখা যায় বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা (কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, খুলনা, পটুয়াখালী, ভোলা ইত্যাদি) বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য বিশেষ উপযোগি। সাইট স্পেসিফিক তথ্য আহরণের জন্য প্রয়োজন হয় সাইট শর্টলিস্টিং। এক্ষেত্রে বিবেচনা করা হয় এলাকাসমূহের কাঠামোগত অবস্থান (Infrastructure development), জাতীয় গ্রীডলাইনের প্রাপ্যতা, যোগাযোগ ব্যবস্থা, জনবসতি ইত্যাদি। সাইট শর্টলিস্টিং এর পর মেট টাওয়ার বা রিমোট সেন্সিং যন্ত্রপাতি যেমন: সোডার, লাইডার ব্যবহার করে একটি নির্দিষ্ট এলাকার ১২০ মিটার উচ্চতায় বায়ুর গতিবেগ, দিক, আর্দ্রতা, তাপমাত্রা ইত্যাদি তথ্যাদি অন্তত দুইবছর আহরণ করা হয় এবং এসকল তথ্যাদি কোন একটি সার্ভারে সুষ্ঠুভাবে সংরক্ষিত করা হয়। এই তথ্য আহরণের সময় আন্তর্জাতিক মানদণ্ড IEC-614001 অনুসরণ করা না হলে বায়ুর তথ্য আহরণের সম্পুর্ণ কার্যক্রমটিই ব্যর্থ বলে গন্য হতে পারে।
ধাপ: ৩
প্রাপ্ত তথ্যাদি সার্ভারে সংরক্ষণের পাশাপাশি চলতে থাকে প্রাপ্ত তথ্যাদি মানসম্পন্ন কিনা (Quality Control) তা যাচাই করা। বায়ু বিষয়ক তথ্য আহরণে অনেক ধরণের ক্রটি ধরা পড়ে যা অভিজ্ঞ প্রকৌশলী কর্তৃক প্রতিদিন যাচাই করা হয় ও মান নিশ্চিত করা হয়। এবিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ বিনিয়োগকারীদের রিস্ক এ্যসেসমেন্টের প্রধান একটি অংশ হচ্ছে বায়ুর তথ্যাদির মান (Bankability of Data)। প্রাপ্ত তথ্যাদির মান নিশ্চিতকরণের পর শুরু হয় উইন্ড ফার্ম মডেলিং বা কোন একটি নির্দিষ্ট এলাকায় কোন মডেলের উইন্ড টারবাইন ব্যবহার করে সর্বোচ্চ পরিমাণ বায়ুবিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব তা নির্ণয় করা। এটি বায়ুবিদ্যুতের সম্ভাব্যতা যাচাই কার্যক্রমের বড় একটি অংশ। উইন্ড ফার্ম মডেলিং এর পর নিশ্চিত একটা ধারণা পাওয়া যাবে কোন এলাকায় বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন বিনিয়োগকারীদের জন্য কতটা নিরাপদ। উপরিউক্ত ধাপ তিনটি ব্যতীত কোন এলাকায় বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা করা যাবে না।
Table-1: Wind Resource Assessment Initiatives in Bangladesh
Sl.# | Name of the Organization | Data Collection Period | Location | Mesurement Height and Instrument | No of Sites | Avarage Wind Speed |
1 | Wind Energy Study Project (WEST)-conducted by Bangladesh Center for Advanced Studies (BCAS) Supported by Energy Technical Support Unit (ETSU) of UK & LGED | 1995-1997 | (i) Patenga (ii)Cox’s Bazar (iii)Kutubdia (iv)Teknaf (v)Noakhali (vi)Kuakata and (vii) Char Fassion |
Cup anemometer with data logger collected at 10m and 25 m | 7 | The average annual wind speed values at 25 meter height for the seven stations vary from 2.96 m/sec to 4.54 m/sec. The highest average annual value (4.54 m/sec) was observed in Kuakata and the lowest value (2.96 m/sec) was observed in Teknaf and Noakhali. |
2 | Technical Expertise for Renewable Application Project (TERNA)-Conducted by Bangladesh Atomic Energy Commission (BAEC) Supported by REVB1 of GIZ | 1995-1997 | (i) Patenga (ii) Anwara (iii) Teknaf and (iv) Feni |
Cup anemometer with data logger- 20 m anemometer height | 4 | Teknaf at 20 m: 4.3m/s Other sites have low wind speed at 20m. |
3 | Bangladesh Council for Scientific and Industrial Research (BCSIR) & IFRD | Jan 2001-Apr 2002 | i)Saint Martin ii)Teknaf and iii)Meghnaghat |
Cup anemometer with data logger at 10m, 30m | 3 | Highest at Saint Martin at 30 m: 4.7 m/s Lowest at Teknaf at 10 m: 3.5 m/s |
4 | Wind Energy Resource Mapping Project (WERM)-Conducted by Local Government Engineering Department (LGED) | 2003-2006 | A total of 20 sites including 7 sites of WEST project. | Cup anemometer with data logger at 20m, 30m, and 40m | 20 | Kuakata at 30 m: 4.2 m/s Kutubdia at 20 m: 3.6 m/s Other sites have considerably low wind speed at 20m, 30m and 40m |
5 | Wind Resource Assessment Program (WRAP) of BPDB-Conducted by Pan Asia Power Services Ltd | One year of data between 2003 and 2005 | i)Muhuri Dam ii)Mognamaghat iii)Parky beach iv) Kuakata |
Cup anemometer with data logger at 50 m | 4 | 6.5-6.9 m/s |
২০১৪ সালে বিদ্যুৎ বিভাগের উদ্যোগে এবং USAID এর কারিগরী সহায়তায় বাংলাদেশে প্রথমবারের মত আন্তর্জাতিক মানদন্ড অনুসরণ করে বায়ু বিদ্যুতের তথ্য আহরণ করা শুরু হয় যা ২০১৭ পর্যন্ত চলমান ছিল। ২০১৮ সালে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা আমেরিকার ন্যাশনাল রিনিউএ্যবল এনার্জি ল্যাবরেটরি (NREL) কর্তৃক বিদ্যুৎ বিভাগ বরাবর পূর্ণাংগ প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয় এবং তিনবছরে প্রাপ্ত সকল তথ্যাদি ব্যবহার করে একটি জাতীয় উইন্ড ম্যাপ প্রস্তুত করা হয় যা উপরে বর্ণিত তিনধাপ কার্যক্রমের প্রথম ধাপ হিসেবে যথেষ্ট মানসম্পন্ন। প্রতিবেদনটি টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (স্রেডা) এর ওয়েবসাইটে http://www.sreda.gov.bd/index.php লিংকে পাওয়া যাবে।
Table-2: Details of Wind Measurement at Nine Locations
Site |
Type of Tower/Station & Height |
Installation date |
Data Collection Started |
Monitoring End date |
Coordinates of Tower/Station |
Rajshahi (Lalpur, Natore)
|
Guyed Lattice 80-m Tower |
06/11/14 |
June 2014 |
12/20/2017 |
24.17035°N 88.90734°E |
Chandpur |
Guyed Lattice 60-m Tower |
11/06/14 |
June 2014 |
12/04/2017 |
23.21116°N 90.64237°E |
Sitakunda, Chattogram |
Guyed Lattice Tower-80m |
18/12/14 |
December 2014 |
12/20/2016 |
22.60416° N 91.6601° E |
Parkay Beach, Chattogram |
Guyed Lattice 80-m Tower |
24/12/14 |
December 2014 |
07/14/2017 |
22.18513°N 91.81767°E |
Gouripur Mymensingh |
Guyed Lattice 80-m Tower |
13/08/15 |
August 2015 |
12/13/2017 |
24.71546°N 90.4668°E |
Madhupur Tea Estate,Habigonj |
Guyed Lattice 80-m Tower |
19/10/15 |
October 2015 |
11/22/2017 |
24.37778°N 91.57462°E |
Dacop, Khulna |
Guyed Lattice 80-m Tower |
31/10/15 |
October 2015 |
12/25/2017 |
22.47342°N 89.56826°E |
Inani Beach, Cox’s Bazar |
SoDAR 40-200m |
07/25/14 |
July 2014 |
08/02/2015 |
21.14732°N 92.07575°E |
Badarganj Rangpur |
SoDAR 20-200m |
05/08/15 |
August 2015 |
04/19/2017 |
25.60641°N 89.06877°E |
২০১৬-২০১৮ সালের মধ্যে তিনটি পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানী কর্তৃক সাইট স্পেসিফিক উইন্ড রিসোর্স এ্যাসেসম্যান্ট এর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। ২০১৬ সালে, কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানী অফ বাংলাদেশ লিমিটেড (CPGCBL) কক্সবাজার জেলার অন্তর্গত মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ী দ্বীপে একটি উইন্ড ফার্ম স্থাপনের জন্য তথ্য আহরণ ও সম্ভাব্যতা যাচাই করে। উইন্ড ডাটা সংগ্রহকাল ছিল ফেব্রুয়ারী ২০১৭ হতে ফেব্রুয়ারী ২০১৮ পর্যন্ত। মিন উইন্ড স্পিড পাওয়া যায় ১০০ মিটার উচ্চতায় ৫.৭৬ মি./সে.। ইলেকট্রিসিটি জেনারেশন কোম্পানী অফ বাংলাদেশ (ইজিসিবি) এর উদ্যোগে ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায় একটি উইন্ড রিসোর্স স্টাডি পরিচালিত হয়। উইন্ড মেজারমেন্ট ইন্সট্রুমেন্ট হিসেবে লাইডার (LIDAR) ব্যবহ্রত হয়। ডাটা সংগ্রহের সময়কাল ছিলো জুন ২০১৭ হতে সেপ্টেম্বর ২০১৮। মিন উইন্ড স্পিড - ১০০ মিটার উচ্চতায় ৫.৩৮ মি./সে.। ২০১৭ সালে, নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানী লিমিটেড (NWPGCL) কর্তৃক চীনের ফুজিয়ান ইলেকট্রিক পাওয়ার সার্ভে এবং ডিজাইন ইন্সটিটিউট (FEDI) কে পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলায় নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি (NWPGCL)এর পায়রা থার্মাল পাওয়ার প্লান্টের নিকটে ৫০ মেগাওয়াট উইন্ড পাওয়ার প্লান্ট স্থাপনের জন্য বায়ুর তথ্য আহরণের নিমিত্তে নিযুক্ত করা হয়। নভেম্বর ২০১৯ সালে ফেডি (FEDI) কর্তৃক দাখিলকৃত প্রাথমিক তথ্য থেকে দেখা যায়, ১২০ মিটার উচ্চতায় মিন উইন্ড স্পিড ৫.৪৬৬ মি./সে.।
চিত্র- বাংলাদেশের উইন্ড রিসোর্স ম্যাপ
বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদনে বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা
১৯৮২ সালে একটি প্রাথমিক গবেষণায় দেশের ৩০টি আবহাওয়া তথ্য স্টেশন থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুসারে দেখা যায় যে, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার বায়ুর গতি প্রকৃতি অনুসারে ঐ স্থানদ্বয় হচ্ছে বায়ু থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য উপযুক্ত স্থান। এরপর আরও পরীক্ষা নিরীক্ষার পর বায়ুশক্তি হতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের একটি পাইলট প্রকল্পের অংশ হিসেবে ২০০৫ সালে ফেনীর মহুরী নদীর তীর ও সোনাগাজী চরাঞ্চল ঘেঁষে খোয়াজের লামছি মৌজায় ৬ একর জমির উপর স্থাপিত হয় বাংলাদেশের প্রথম বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্র। এটি চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল হলেও পল্লীবিদ্যুতের একটি ফিডারে যোগ হয়ে তা বিদ্যুতের চাহিদা কিছুটা হলেও মেটাতে ভূমিকা রয়েছে। যদিও ২০০৭ সালে কারিগরি ক্রুটি, অব্যবস্থাপনা ও পর্যাপ্ত বাতাস না থাকায় এর কার্যক্রম বেশ কয়েকবছর বন্ধ ছিল। পরবর্তীতে সংস্কার করে ২০১৪ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে তা পুনরায় চালু হয়। চালু হওয়ার পর ২০১৪ সালে মোট উৎপাদন হয়েছিল প্রায় ২ লাখ ২ হাজার ৪শ ৩৯ ইউনিট। তখন গড় উৎপাদন ছিল দৈনিক ১৬ হাজার ৮৩০ ইউনিট। বর্তমানে পিডিবির প্রজেক্টের আওয়তায় প্যান এশিয়া পাওয়ার সার্ভিস লিমিটেডের মাধ্যমে চারটি টারবাইন দিয়ে বাতাসকে কাজে লাগিয়ে ২২৫ কিলোওয়াট করে ৯শ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এটির সর্বোচ্চ উৎপাদন ক্ষমতা ০.৯০ মেগাওয়াট।
বাংলাদেশের অন্য আরেকটি বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায়। ২০০৮ সালের পহেলা বৈশাখে এই কেন্দ্র থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ ৬০০ গ্রাহকের মধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে বিতরণও করা হয়েছিল, যেখানে ছিল ৫০টি টারবাইন৷ প্রতিটির ক্ষমতা ২০ কিলোওয়াট করে৷ অর্থাৎ এই কেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ১ মেগাওয়াট। যদিও পরীক্ষামূলকভাবে বিদ্যুৎ বিতরণের পর বেশ কয়েকবছর যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে দেশের সর্ববৃহৎ এ বায়ু বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ ছিল, তবে তা আবার নতুন করে চালু হয়েছে।
বাংলাদেশ সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে বায়ুশক্তি হতে ১৩৭০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করেছে এবং ২০২১ সালের মধ্যে বায়ু শক্তি উৎস হতে মোট ১১৫৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করেছে। কোন স্থানে বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের পূর্বশর্তই হলো সেই স্থানের বায়ু প্রবাহের গতিবিধি ও পর্যাপ্ততা সংক্রান্ত তথ্য উপাত্ত দীর্ঘ মেয়াদে সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করা। সে লক্ষ্যে উপকূলীয় অঞ্চলসহ দেশের নিম্নবর্ণিত ৯ (নয়) টি স্থানে বায়ু বিদ্যুতের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের উদ্দেশ্য “উইন্ড রিসোর্স ম্যাপিং প্রকল্প” এর আওতায় বায়ু প্রবাহের তথ্য উপাত্ত (ডাটা) সংগ্রহ করা হয়েছে। ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে বর্ণিত সকল স্থানের Wind Mapping কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে।
NREL প্রদত্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা বিশেষত খুলনার দাকোপ, চট্টগ্রামের আনোয়ারা এবং চাঁদপুরের নদী মোহনার এলাকা সমূহে ১০০ মিটার উচ্চতায় বাতাসের গড়বেগ ৬ মিঃ/সেঃ এর বেশী যা বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদনে অত্যন্ত সম্ভাবনাময়। উক্ত প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়েছে যে বাংলাদেশে প্রায় ২০,০০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা রয়েছে যেখানে বাতাসের বেগ ৫.৭৫-৭.৭৫ মিঃ/সেঃ যার মাধ্যমে প্রায় ৩০,০০০ মেগাওয়াট বায়ু বিদ্যুৎ পাওয়া সম্ভব। যদিও এই পরিসংখ্যান অনেকগুলো নিয়ামকের উপর নির্ভরশীল তবুও প্রতিবেদনটি বাংলাদেশে বায়ু বিদ্যুতের প্রসারে যথেষ্ট আশাব্যঞ্জক।